‌কেন এমন চিঠি রাজ্যপাল দিলেন? রাজ্যপালের আইনজীবীকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির

‌কেন এমন চিঠি রাজ্যপাল দিলেন? রাজ্যপালের আইনজীবীকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির

উপাচার্য নিয়োগ মামলায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল। সুপ্রিম কোর্টে আজ, সোমবার এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি সূর্যকান্তের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানে সবপক্ষের আইনজীবীদের একসঙ্গে বসার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ইউজিসি, রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের পক্ষ থেকে উপাচার্য নিয়োগের প্যানেল গঠনের জন্য জমা পড়েছে প্রস্তাবিত নামের তালিকা। সেখান থেকে সম্মিলিত তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইনজীবীদের। সবপক্ষকে একসঙ্গে বসার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই তালিকা থেকে উপাচার্য নিয়োগের চূড়ান্ত প্যানেল গঠন করবে সুপ্রিম কোর্ট।

আজ এখানে শুনানি চলাকালীন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের পক্ষের আইনজীবীকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সুপ্রিম কোর্ট আগে যে নির্দেশ দিয়েছিল তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। আদালতের সেই নির্দেশের পরও কেন রাজভবন থেকে চিঠি দেওয়া হল?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এদিন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী জানান, সর্বোচ্চ আদালতের আগের পর্যবেক্ষণ মেনে মুখ্যমন্ত্রী গত ২ নভেম্বর আচার্য তথা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু গত ৭ নভেম্বর আবার রাজ্যপাল একটি চিঠি লেখেন। সেখানে রাজ্যপাল জানান, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে এমন কোনও বৈঠকের কথা বলা হয়নি। এতেই চটে যান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।

আর তখনই রাজ্যপালের আইনজীবীকে বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এদিন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‌অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রী এবং আচার্যকে বৈঠকে বসার কথা প্রকাশ্য এজলাসেই বলা হয়। সেখানে রাজ্যপালের আইনজীবী নিজে উপস্থিত ছিলেন। তারপরও কেন এমন চিঠি রাজ্যপাল তথা আচার্য দিলেন? সুপ্রিম কোর্টের মৌখিক পর্যবেক্ষণে যা বলা হয়েছে, তার কি কোনও গুরুত্ব নেই? তবে কি নির্দেশ দিতে হবে?’‌ কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্যপালের আইনজীবী জানান, তিনি এই চিঠির বিষয়ে কিছু জানেন না। তবে খোঁজ নেবেন। তারপর রাজ্যপালের আইনজীবীকে কড়া নির্দেশ দেন বিচারপতি, কেন রাজ্যপাল তথা আচার্য চিঠি দিলেন সেটা নিয়ে যেন রিপ্লাই ফাইল করা হয়।

আর কী জানা যাচ্ছে? উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আগেই সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উপাচার্য নিয়োগ করা কোনও রাজ্যপালের একক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে তা হতে পারে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে কফি টেবিলে আমন্ত্রণ জানিয়ে এই জট ছাড়াতে নির্দেশ‌ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর ইউজিসি, রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালকে আগেই সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, প্যানেল তৈরির জন্য প্রস্তাবিত নাম জমা দিতে। সেই তালিকা এখন সবপক্ষই জমা দিয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্ট আজ নির্দেশ দেয়, তিন পক্ষকে একসঙ্গে বসে একটি সম্মিলিত প্যানেলের তালিকা তৈরি করে জমা দিতে হবে। আগামী ১ ডিসেম্বর এই নিয়ে আবার শুনানি হবে।

Politics West Bengal